ফ্যাটি লিভার ডিজিজ বা নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ। বর্তমানে যেটিকে বলা হয় মেটাবলিক ডিসফাংশন-অ্যাসোসিয়েটেড স্টিটোটিক লিভার ডিজিজ। এখন আর শুধু প্রাপ্তবয়স্কদের সমস্যায় সীমাবদ্ধ নেই, আক্রান্ত হচ্ছে বহু শিশু-কিশোরও। বিশেষজ্ঞদের মতে, জীবনযাত্রার ধরন ও খাদ্যাভ্যাসে অবহেলার কারণেই এই রোগ ক্রমশ ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
কী এই ফ্যাটি লিভার ডিজিজ?
লিভারে চর্বি জমে যাওয়াকে বলা হয় ফ্যাটি লিভার ডিজিজ। এটি প্রধানত দুই ধরনের হয়ে থাকে : অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ, নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ। যখন অতিরিক্ত অ্যালকোহল ছাড়াই লিভারে চর্বি জমে, তখন একে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ বলা হয়। চিকিৎসকদের মতে, এই রোগ সময়মতো নিয়ন্ত্রণে না আনলে তা সিরোসিস বা এমনকি লিভার ক্যান্সারে পরিণত হতে পারে।
কোন অভ্যাসগুলো বাড়ায় ঝুঁকি?
চিকিৎসকরা এমন দৈনন্দিন অভ্যাস চিহ্নিত করেছেন, যা ফ্যাটি লিভারকে ক্যান্সারে রূপান্তরিত করতে পারে। সেগুলো হলো-
চিনিযুক্ত পানীয় ও মিষ্টি, সোডা, ক্যান্ডি, প্যাকেটজাত মিষ্টান্ন নিয়মিত খেলে লিভারে চর্বি জমে। গবেষণায় দেখা গেছে, এ ধরনের খাবার গ্রহণে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি ৪০% বাড়ে। পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট যেমন— পাউরুটি, ময়দার পাস্তা— এগুলো বিপাকে বিঘ্ন ঘটায় ও লিভারে চর্বি জমায়।
অতিরিক্ত তেল ও প্রিজারভেটিভযুক্ত এসব খাবার লিভারের জন্য ভয়ংকর। শারীরিকভাবে কম সক্রিয় হলে লিভারের বিপাক হ্রাস পায়, বাড়ে চর্বি জমার ঝুঁকি। এই চর্বিগুলো লিভারের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত করে এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে।
যাদের শরীরে ইতিমধ্যেই অন্যান্য রোগ রয়েছে, তাদের জন্য রেড মিট বা ভারী খাবার বিপজ্জনক হতে পারে। অতিরিক্ত ওজন ও পেটের মেদ বেড়ে গেলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হয়, যা লিভারে প্রদাহ সৃষ্টি করে।
সামান্য অ্যালকোহলও ফ্যাটি লিভারকে সিরোসিসের দিকে নিয়ে যেতে পারে। ধূমপান লিভারের কোষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
কী করা উচিত?
দিনে অন্তত ৩০ মিনিট হালকা থেকে মাঝারি এক্সারসাইজ করুন।
চিনিযুক্ত পানীয় ও ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলুন।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন ও খাদ্যতালিকায় ফাইবার-যুক্ত খাবার রাখুন।
ধূমপান ও অ্যালকোহল ত্যাগ করুন।
চিকিৎসকদের মতে, ফ্যাটি লিভার ডিজিজ ‘নীরব ঘাতক’। তাই উপসর্গ না থাকলেও, রুটিন স্বাস্থ্য পরীক্ষায় লিভারের অবস্থা জেনে রাখা জরুরি। শরীর সচল রাখুন, সচেতন থাকুন।

